Total Pageviews

কামরুল হাসান-এর কবিতা


কামরুল হাসানের মতে নিরীক্ষা এজন্য প্রয়োজন যে নিরীক্ষা ছাড়া নতুন কবিতার জন্ম হয় না। কবিতা যত ভালো হোক, তা যদি নতুন চেতনা ও আঙ্গিক ধারণ না করে, তবে তা একই বৃত্তে ঘুরপাক খাবে, প্রচলের ক্লিশে ভরে ফেলবে কবিতার জমিন, তাতে আর নতুন শস্য জন্মাবে না।
নিরীক্ষা যে করে সে কেবল সাহসীই নয়, সে সৃষ্টিশীল, সে প্রত্যাখান করেছে প্রচলকে, সে আবিস্কার করতে উদগ্রীব কবিতার নতুন দিগন্ত।

কামরুল হাসান-এর কবিতা

বিন্যাস

দ্রৌপদীর আঁচল এ হাওয়া
ধরে থাকি পাঁচজন প্রবল পুরুষ।

প্রবল আঁচল এ হাওয়া
ধরে থাকি দ্রৌপদীর পাঁচজন পুরুষ।


দ্রৌপদীর পাঁচজন পুরুষ প্রবল
এ হাওয়া আঁচল ধরে থাকি।

এ প্রবল আঁচল দ্রৌপদীর
পাঁচজন পুরুষ ধরে থাকি হাওয়া।

প্রবল পুরুষ এ হাওয়া
পাঁচজন ধরে থাকি আঁচল দ্রৌপদীর।

দ্রৌপদীর পুরুষ এ হাওয়া
পাঁচজন ধরে থাকি প্রবল আঁচল।


প্রেম বা জ্যামিতির কবিতা

শহর এক আশ্চর্য জ্যামিতি;
ত্রিভূজ সম্পর্ক কত গোলাকার পার্কে ঝরে পড়ে।
ঘন হয়ে উঠেছে ঐ দালান ধ্রুপদ
ধূর্তের তীব্র, সুতীব্র পিরামিড
ব্যাসার্ধ ছাড়িয়ে বাড়ে শহর প্রাচীর।

গোলাকার বল হাতে বালকেরা চলেছে সব
আয়তাকার মাঠ লক্ষ্য করে
             ঝাঁপায় কাঁপায় ওদের সন্ত্রাস
বালখিল্য চতুষ্কোণ ঘিরে বিপুল উল্লাস-ধ্বনি
ত্রিভূজের বিষম বাহুর শেষে সন্নিহিত কোণে।

আনুভূমিক ঐ সরল পথখানি ধরে
পরিবর্তনশীল রাশির মত গাড়ি ছুটে যায়
অভিলম্ব ধরে গেলে নীলাদের বাড়ি
চাঁদখানি ঝুলে আছে ত্রিমাত্রিক ভরে।

সকালে আমি (৪,৮), নীলা ছিল (৬,৩)-এ
বিকেলে ক্যাফেতে দুজনেই (৫,৫)
স্থানাঙ্কের নিয়ম মেনে কফিতে দিই চুমুক
নীলা চলে গেলে সকল স্থানাঙ্কের মূল্য হয় (০,০)।

নীলাদের পাশের বাড়ির ছাদ তৃতীয় অক্ষ ত
আমি যে মাঠে অস্থির হাঁটি তার দুই বাহু ঢ এবং ণ
দুই মাত্রা থেকে নির্ণিমেষ তাকিয়ে থাকি
তৃতীয় মাত্রার দিকে, নীলা আজ ছাদে ওঠে কি না!

দারুণ এক ঘনকের ঘরে আমাদের আনন্দমেলা
নিখুঁত গোলকের বাঁকা পিঠে ক্লান্তিহীন খেলা!




No comments:

Post a Comment