ইকতিজা
আহসানের মতে গল্পের নিরীক্ষা
মূলত কী- এই প্রশ্ন নিয়ে ডানে বায়ে বহু হেঁটে অবশেষে যে পথের দেখা পেয়েছেন তার
পরতে পরতে ছড়ানো রয়েছে শৈলী নামক এক শৈল্পিক প্রপঞ্চ। আর শৈলী নিয়ে ভাবা মানেই
আপনি আপনার গল্পটি বলার জন্য নতুন ভঙ্গি খুঁজছেন। যদি শেষ পর্যন্ত আপনি নতুন
ভঙ্গিতে বলতে পারেন, তবেই আপনি নিরীক্ষাপ্রবণ লেখা লিখেছেন বলে আপনি ধরে নিতে
পারেন। নিরীক্ষা বলতে তো প্রাথমিকভাবে এই
বুঝি....
ইকতিজা
আহসান-এর গল্প
রাষ্ট্র;
রিক্সা ও তোমার পায়জামার নীচে ইঁদুর
ক.
তোমার পায়জামার নীচে ইঁদুর; কেন্দ্রাভিমুখী টানে :
তারপরও
তোমার পায়ের নখ সম্পূর্ণ আছে পূর্বে মতো-ই; এমত ভাবনায় প্রথমত জারিত হয়ে তৃপ্তিমনে
আবার নখের দিকে তাকিয়ে-ই চমকে ওঠো তুমি। নখের কোণায় চামড়ার পাশে সূক্ষ্ম ফাঁক গলে
প্রবেশপথের ছিদ্র হা করে আছে কিন্তু ক্ষুদ্রতার চরম অনুতে তার অবস্থান। তারপর
ব্যথার অনুভূতিও তোমার ভেতরে সংক্রমিত হয়। তেলাপোকা সংক্রান্ত এইসব ভাবনা তোমার
মনে ফাঁক বুঝে সাই-সাই ঢুকে যায় আজকের ইঁদুরের সাথের সিকোয়েন্সটার তাৎপর্যপূর্ণ
সমাপ্তিতে। শেষপর্যন্ত ইঁদুরের উষ্ণতায় তুমি স্বপ্নবান হলে। ঘুমের মাঝে কল্পিত
শিহরণে যখন ভেঙে যায় সবকিছু তোমার ভেতরে প্রবিষ্ট হয় ইঁদুরের স্বপ্ন। ইঁদুর প্রথমত
তোমার পায়ের কাছে গিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে ভাবে, এইখান থেকে শুরু করা যাক
পুরুষোত্তর-ইঁদুরিত জননেন্দ্রিয়ের চরমতম খেলা। প্রথমে হেয়ালি ভেবে তুমি নঞর্থক কোন
চিহ্নাদি প্রকাশ না করলে; সে জড়িত হয়ে যায় ক্রমান্বয়ে তোমার আচার-আচরণে; শপিংয়ে;
সূক্ষ্মতালে জমে ওঠা আবেগে আলাপে ও তোমার বিভিন্ন প্রয়োজনে। এর মাঝে ভদ্রস্থ মানব
সমাজে তার ইঁদুর সংশ্লিষ্ট যাবতীয় পরিচয়াদি গোপন করতে করতে সে অজান্তেই আবার মূর্ত
হয়ে ওঠে ইঁদুরিক প্রযোজনায়। তেলাপোকার নখকাটার স্মৃতি ততদিনে ডুবে গেছে অতলতার শেষ
সীমায়। যদিও জুতোর ঘষায় অথবা কোন কোনদিন একটু টাইট জুতার ঘর্ষণে বুড়ো আঙুলটায়
ব্যথার অনুভব হলেও; এইসব সামান্য ব্যথা জুতা-সংশ্লিষ্ট ভাবনাদি ছাপিয়ে তোমার মনে
তেলাপোকা সংক্রান্ত টানা-পোড়েন তুলতে পারেনি কখনও। অবশ্য প্রথম যেদিন ইঁদুর প্রবেশ
করে দৃশ্যে; অবশ্য-ই স্বপ্নে নয় কারণ তুমিও বিশ্বাস করো সে কোন স্বপ্নের দৃশ্য হতে
পারেনা; তুমি হেসেছিলে ও বিস্ময়াভিভূত হয়েছিলে এই ভেবে যে, কিভাবে পাকা বাড়ির পাশে
মাটিকে ক্ষুদ্র গোলের উপর চৌকো আবরণ দিয়ে ইঁদুর তার বাসা থেকে বের হচ্ছে। এবং যদিও
আশেপাশে ধানক্ষেত নেই; তবু খাদ্য-সংস্থানের পর্যাপ্ত যোগানের যথেষ্ট প্রতুলতা
বিদ্যমান। ফলে ইঁদুরের এই দৃশ্যে প্রবেশ তোমাকে স্পষ্টত-ই কৌতূহলী করেছে। স্বপ্ন ও
খেলা আকাক্সক্ষী তুমি; অন্য অনেকের সাথে খেলতে গিয়ে আনাড়িপনার চূড়ান্ত প্রকাশে এবং
শেষ পর্যন্ত নিজের কাছে নিজেকে অব্যাখ্যাত এবং অস্বচ্ছ রাখার বিশেষ যাতনায় যখন
রোমকূপগুলোও ভেতরের আবহমান অনিবার্য চাহিদায় ফুসে ওঠেছিল-তুমি ইঁদুরমগ্ন হলে। তোমার পায়জামার নীচে সেই
থেকে ইঁদুর মসৃণ রাস্তা পেয়ে প্রথমে ভড়কে গিয়ে-ই টের পায়; এক নতুন
ওয়ান্ডারল্যান্ডে তার আগমন ঘটেছে; যেখানে মাটি খুড়ে পূর্বের ন্যায় বাসা বানাতে না
পারলেও; এক সুন্দর ছিমছাম ঝোপঝাড়ময়-বাসা
বাড়িতে রান্নাঘরে অন্ধকারে হানা দেওয়ার সময় মাঝে মধ্যে যেমন মিষ্টির হাড়ির মতো
রসময় অনুভূতির দেয়াল ঘেরা বাসা এখানে রয়েছে। যদিও ইঁদুর পায়জামার নীচে ঢুকে-ই
কেন্দ্র চিনতে পারেনি। তবুও কেন্দ্রাভিমুখী এক অনিবার্য টানে ঠিক-ই রাস্তার পাড়
ঘেষে দিক হারিয়ে ফেলেনি। ফলে ইঁদুরীয় ভাষায় তুমি স্বপ্নবান হয়ে উঠলে। তোমার
স্বপ্নে বাস্তবে পায়জামার নীচে এখন ইঁদুরের আনাগোনা। সেইসব ইঁদুর যাদের লাগাম কখনও
আয়ত্তে থাকেনা। সময়ের এই পুঁজিময় ও ভোগবাদী ইঁদুর তোমার পায়জামার নীচে
কেন্দ্রাভিমুখী টানে গতিশীলতার শিরোনামে প্রাচ্যদেশীয় মঞ্চনাটক ‘কইন্যা’য়
তোমাদের দেখা পাওয়া যায়।
খ.
রিক্সার স্পোকের অনন্ত ঘূর্ণন :
রিক্সা
যে তখনও চলছে আমি জানতাম না। বোঝা না-বোঝার মাঝামাঝি তোমার সাথে সম্পর্কটাকে আমি
ছেড়েই দিয়েছিলাম নিয়তির হাতে। তবুও সমাজের ব্যক্তিদের কারও কারও জন্মদিন থাকে;
কারও কারও হাতে টাকার অফুরান যোগান থাকে। আর টাকার শক্তির কাছে আমরা সকলেই যে
নস্যি সে তো জ্যামিতির প্রমাণিত সম্পাদ্য। কিছুদিন থেকেই তোমার ভেতরে ধরি মাছ
না-ছুঁই পানি; এই কৌশলে কার্যোদ্ধারের যে চোর চোর অথবা বলা যায় আত্ম-লুকানো যে
প্রচ্ছদ দেখা দিয়েছিল, সেটাকে গ্রাহ্যে না এনেও অগ্রাহ্যে কখনও রাখতে পারিনি। এবং
নির্ভরশীলতার গল্পে সেই সব পুঁজিময়পূঁজগন্ধয়ালা অথবা তোমার দৃষ্টিতে
পুঁজিময়সুগন্ধয়ালা এবং ব্যক্তিত্বসম্পন্নয়ালাদের কেউ যখন কেন্দ্রিয় চরিত্র হয়ে ওঠে
এবং তোমার মোবাইলে যখন রাত-বিরাতে তার কণ্ঠস্বর শোনা যায়...রিক্সার অনন্ত ঘূর্ণনের
চিত্র বার বার চলচ্চিত্রের দৃশ্যের মতোই ভেসে উঠতে থাকে। যদিও রিক্সা চলা শুরু
করার পটভূমি একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়াতেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। জন্মদিনের সেই
বোরহানীসন্ধ্যায় তোমার রাজধানী সাজের উজ্জ্বল মুখের ভাষা আমাকে একটি সূত্রতে উপনীত
হতে সাহায্য করেছিল। যদিও সেই সূত্রতে সম্পূর্ণ আস্থা আমি তখন পর্যন্ত স্থাপন
করিনি। কিন্তু দেখো, ঢাকা শহর কত ছোট! এ শালা নিশ্চয়ই ষড়যন্ত্র! বিশ্বায়ন! মাগার পৃথিবী
খিইচ্চ্যা আইবার লাগছে! না হয়, তোমরা দুজনে নিরিবিলি একটা জায়গায় মনের মাধুর্য ও
আবেগ মিশিয়ে কিছু সময়ের ভাগ কেন পাবে না। কেন মঞ্চ নাটক উপভোগেও ঢুকে পড়বে উটকো সব
অনাকাক্সিক্ষত টিকটিকি সদৃশ চরিত্র। কেন তুমি ভড়কে না-যাবার চেষ্টায় অসম্ভব সাফল্য
পেলেও; পুঁজিময়পুঁজগন্ধয়ালা তোমার দৃষ্টিতে পুঁজিময়সুগন্ধয়ালা জাকজমকভাবে জন্মদিন
পালন করা বন্ধু ভড়কে গিয়ে নানান অজুহাতে সদ্য প্রেমে পড়া কিশোরের মতো ক্যালাসনেস
বয়ে আনবে নিজের মুখমণ্ডলে। আর তখন থেকেই আমার সম্মুখে বন্ধুদের
রহস্যময়তা....রিক্সা আর থামেনা, বন্ধুদের হেয়ালি- সুরঞ্জনা, ঐখানে যেওনাকো তুমি। আর আমার
প্রথমভাগে নিশ্চুপ বোকা বনে যাওয়া থেকে গাধায় পর্যবসিত হওয়ার আগেই আমি টের পাই,
রিক্সা তো ঢাকা শহরে একটাই চলছে। যেটা চলা শুরু করেছিল রাত দশটায়...গুলিস্তানের
সিদ্দিক বাজারের স্টার হোটেলের সামনে থেকে...সেই রিক্সা আজ জন্মদিনের পরেরদিন এখন
রাত সাড়ে-দশটা; এখনও চলছে। হা ঈশ্বর! রিক্সা চলছে। আমার পাজরের উপর দিয়ে রিক্সা
ঢাকা শহর ঘুরে বেড়াচ্ছে। যদিও সে রাতে আমার ঘুম আর স্থির থাকেনি।
আমি
রিক্সার স্পোকের সাথে নিজেকে বেঁধে নিয়ে চোখ মেলে দেখেছি, তুমি আমার প্রেমিকা;
নিশাচর এডাল্ট খুনসুটিতে অন্যের আদরে নিজেকে খুলে দিচ্ছো। আর ঢেউয়ের মতো ফুলে ফুলে
আরও আদরে; আরও কামে ডুবে যাচ্ছো...ডুবিয়ে নিচ্ছো তাকেও।
গ.
রাষ্ট্র ও তুমি :
আমি
লাল কালীতে সব সময় ‘রাষ্ট্র’ শব্দটি লিখি আর কালো কালিতে
তোমার নাম লিখতাম। আমার জন্ম থেকে আমি রাষ্ট্র দেখে এসেছি। শুনেছি খুব পবিত্র ও
জনগণের সেবক রাষ্ট্র আমাদের সবার জীবনের জন্য খুব প্রয়োজনীয় উপাদান। শুনেছি
রাষ্ট্র ছাড়া একটি জীবনের পূর্ণাঙ্গতা আসে না। শুনেছি আমার বড় ভাইয়েরা তাদের জীবন
দিয়ে যুদ্ধ করেছেন একটি পৃথক রাষ্ট্রের জন্য সেই ১৯৭১-এ। আমি আব্দুর রহিম জন্মের
পর যতবার নিজের নামটি শুনেছি ততবার শুনেছি আমার রাষ্ট্রের নাম ‘বাংলাদেশ’।
শুনেছি দেশ নাকি মায়ের মতো মমতাময়ী। আমি রাষ্ট্রের কথা শুনে শুনে আমার বড় হওয়ার
সাথে সাথে রাষ্ট্রের বড় হওয়ার ধাপগুলোও শুনেছি। শুনেছি এ রাষ্ট্র ফজলুল হক;
সোহরাওয়ার্দী; মওলানা ভাসানী; শেখ মুজিব-এই
নামের একেকটি খুঁটির উপর দাঁড়িয়ে আছে। আমি ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের কথা শুনেছি।
শেখ মুজিব গ্রেফতার হওয়ার পর আমি মুক্তিযুদ্ধে তাজউদ্দিনের ভূমিকার কথাও শুনেছি।
আমার চাচার নিখোঁজ হওয়ার কাহিনী শুনতে শুনতে ‘৭১
এর একটা সম্পূর্ণ চিত্রই আমার মনের পর্দায় ভেসে ওঠে। আমি যা বোঝার ‘৭১
সম্পর্কে বুঝে নিয়েছি। আমার যুদ্ধ ফেরত পঙ্গু মামা একটি ভেঙ্গে যাওয়া হাড়ির
ভগ্নাংশ আমাকে ছোটবেলা থেকে দেখিয়ে এসেছে। তখন কিছুই বুঝিনি; এখন কিছু কিছু বুঝি।
মনে হয় ভেঙ্গে যাওয়া হাড়িটি আসলে ভেঙ্গে যাওযা স্বপ্নের প্রতীক। সিরাজ সিকদারের
গল্পও শুনতে হয়েছে আমাকে। আর নায়কের প্রতিশব্দ খলনায়ক শব্দটি কিভাবে একটির ভেতরে
অন্যটি অভিযোজিত হয়ে যায় এই প্রথম আমি বুঝতে পারি। আমি রক্ষীবাহিনীর দেশরক্ষার
কাহিনীগাঁথা বৃদ্ধ পাড়াত-দাদুর মুখে শুনে শুনে বুঝে ফেলি তার হারানো ছেলেটিকে
রক্ষীবাহিনীই ধরে নিয়ে রক্ষা! (গায়েব অর্থে) করেছিলেন জীবনের হাত থেকে। এরপর আমাকে
শুনতে হয়েছে ৭ই মার্চের সেই শ্রেষ্ঠ কবিতা’র প্রণেতার স-পরিবারে করুণ মৃত্যুর কথা।
এরপরের সামরিক শাসকদের নিষ্ঠুরতার কাহিনীগাঁথা শুনতে শুনতে শোনা হয়ে গেছে তাদের
কীর্তিগাঁথাও। কর্নেল তাহেরের মৃত্যুর সাথে সাথে তার স্বপ্নের মৃত্যুও রাষ্ট্রের
লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে আছে। মীর জাফর শব্দটির অর্থ-প্রয়োগের সাথে সাথে সেই
রাষ্ট্রনায়কের সামরিক উর্দির খাল-কাটা পোশাকও আমার চোখে ভেসে ওঠে। পরবর্তী নয়
বছরের ঝরে যাওয়া নূর হোসেনদের আত্মহুতি আমি মফস্বলের এক নিম শহরে বসে শুনেছি;
মনশ্চক্ষে দেখেছি এবং ডিসেম্বরে বিজয় মিছিলে আমিও ছিলাম। এরপরের গণতন্ত্রের ঢোলও
আমি দেখেছি। ঢোলের ভেতরে যেমন ফাঁপা রাখতে হয় বাজনার সুবিধার্থে...হায় ঢোল
গণতন্ত্র! রাষ্ট্রকে নিয়ে জুয়া খেলার তাস সব সময়ই ছিল অন্য হাতে। ফলে যে আব্দুর
রহিম আমি নিজের নামের সাথে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটিকে মিলিয়ে গুলিয়ে ফেলেছিলাম, আজ আমার
মনে হয় রাষ্ট্র মানে হল সাধারণ মানুষের রক্তপাত। আর কিছু দেশীয় অভিজাত এজেন্টের
চক্রাকারে ক্ষমতায় আরোহণ। আর এই সাধারণ মানুষের রক্ত ছাড়া রাষ্ট্রের পিপাসা মেটে
না ফলে কিছু কিছু সাধারণ মানুষকে মরতে হয়...মরতে হবেই।
ফলে
রাষ্ট্রের কথা আমি সব সময়ই লাল কালিতে লিখি। আর আমি আব্দুর রহিম সাধারণোত্তর
সাধারণ রাষ্ট্রের থেকে ২০০ গজ দূরে থাকার আপ্রাণ চেষ্টায় সব সময়ই নিজেকে নিয়োজিত
রাখি। ফলে বৃক্ষের আড়ালে আড়ালে ও ছায়ায়-মায়ায় থাকতে থাকতে তোমার সাথে শিউলী তলায়
আমার দেখা হয়ে গেলে পাজরের হাড়গুলো খুলে তোমাকে উপহার দিয়েছিলাম আর নিজের খণ্ডিত
মস্তকও হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম তোমার জন্য। তুমি আমার উপহার স্মিত হাস্যে সাদরে
গ্রহণ করলে। আর দ্যাখো কি অদ্ভুত পরিহাস আমি বুঝতে পারিনি, বুকের পাজর ও মস্তকহীন
আমি কিভাবে তোমার সাথে মিলিত হব! আর তুমি আমার পাঁজর ও মস্তক তোমার শোকেস সাজিয়ে
পুঁজিময়পূঁজগন্ধয়ালার সাথে অনন্ত রিক্সার আরোহী। যদিও নিজের নামটির সাথে আমি তোমার
নামটিও এমনভাবে মিলাতে শুরু করেছিলাম যেন রহিমের পর তোমার নামটি অনিবার্য
ধারাবাহিকতা, যেমন ধারাবাহিকতা তৈরি হয়েছিল রাষ্ট্রের সাথে। তোমাদের রিক্সার অনন্ত
গতির স্পোকের সাথে নিজেকে বেঁধে নিয়ে আমি তোমার পায়জামার নিচে ইঁদুর দেখতে পাই।
শুনতে পাই, তুমি স্বপ্নবান হয়ে উঠছো ইঁদুরীয় প্রযোজনায়। আর তোমার মুখে আমি ইঁদুরীয়
ভাষা শুনতে পেয়েও আর অবাক হই না। এর ফলে তোমার নাম আমি যতই কালো কালিতে লিখি ততই
কেন যেন লাল হয়ে ভেসে ওঠে। যেভাবে আমি একসময় রাষ্ট্র শব্দটিকে যতই কালো কালিতে
লিখতাম, তা লাল হয়ে উঠতো। শেষ পর্যন্ত কালো কালির সম্ভ্রম ও পবিত্রতার কথা ভেবে
‘রাষ্ট্র’ শব্দটি অনেকদিন আমি লাল কালিতে লিখি আর তোমার নাম ইদানিং।
No comments:
Post a Comment