রাজীব
দত্তের মতে একটি কবিতা
কবিতা-ই। সে হয় সার্থক, নয় ব্যর্থ। অথবা, সে কবিতায় নয়। পাঠক তাঁর ভিন্ন ভিন্ন
রুচি আর অর্জিত ধারণা অনুসারে তাকে বিশ্লেষণ করে নেন, নিজের মতো করে। একজন কবিতা
লিখিয়েকে এ ব্যাপারে নির্দেশ না দেওয়াই ভালো। দেখা যায়, আমরা একটি মানুষকেও এই
ভাবেই বিচার করে থাকি এবং নিজের যুক্তির স্বপক্ষে নানান উদাহরণ টেনে এনে নানান
গাণিতিক কাটাকুটি করে থাকি। কারণ সাধারণ বিচারবুদ্ধিতে আমরা বিশ্বাস করি বিজ্ঞান
সত্য এবং বৈজ্ঞানিকভাবে পরীক্ষিত যা তাহা ‘ধ্রুব সত্য’। আমরা ভুলে যাই বা জানার
চেষ্টা করি না ধ্রুব সত্য বলে কিছুই হয় না। ভুলে যাই আপেক্ষিকতাবাদের বা তারও
পরবর্তী কোয়ান্টামতত্ত্বের অনিশ্চয়তার কথাগুলিও। স্কুল জীবনে জীব/ভৌত বিজ্ঞানের
ক্লাসে কোন পরীক্ষা করার সময় বা বীজগণিতের সমাধান করার সময় যে পদ্ধতিগুলি অবলম্বন
করতে হত সেই ফর্মকে এই কবিতাটির (বক্তব্যকে যথাযথ ভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য)
নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র। সেই অর্থে একজন পাঠক একে ম্যাথম্যাটিক্যাল
পোয়েট্রি বা প্রতিবাদের কবিতা বা আপাদমস্তক একটি সাধারণ কবিতা- যা খুশি ভাবতে
পারেন। আমি বাদুড়ের ন্যায় উলটোদিকে লটকে- নিরবই থাকব।
রাজীব
দত্ত-এর কবিতা
একটি
‘স্বর্গীয়’ সমাধান অথবা তামাশা
পরীক্ষা
ধরে
নেওয়া যাক :
মানুষটি
মৃত।
বিশ্বাস
করুন:
মানুষটি
মৃত।
বস্তুত:
মানুষটি
মৃত
॥ - ১নং দোষীকরণ।
...
ধরে
নেওয়া যাক :
ও
পাখি হবে না।
বিশ্বাস
করুন:
ওর
ডানার উড়ান ক্ষমতা শূন্য
ওর
ঠোঁটে নেই চঞ্চুর কৌণিক কঠোরতা
ওর
পাঞ্জাতে নেই নখরের শক্ত জ্যা
বস্তুত:
লিমিটেশনের
সূত্রানুযায়ী ওর চক্ষু যুগলেও
নেই
নীলিমার
স্পর্ধা ॥ - ২নং দোষীকরণ।
পর্যবেক্ষণ
(১নং
ও ২নং দোষীকরণকে সংযুক্ত করে পাই)
এবং
লক্ষ্য করুন
মৃত
মানুষপক্ষীটি হাসছে।
এবং
লক্ষ্য করুন
মৃত
পক্ষীমানুষটি হাসি মুখে বোঝাতে
চাইছে সে আসলে জীবিত।
এবং
কি আশ্চর্য
হাসি
মুখে মৃতটি
সকলকে
বিশ্বাস করাতে চাইছে
আসলে
সে জীবিত।
অতএব
মহাশয়/মহাশয়া,
পর্যবেক্ষণ
শেষে
(জীবিত-
) মৃত অথবা মৃত ( - জীবিত) মানুষটিকে
বাঁদুরের
ন্যায় আমি
লটকাইয়া
দিলাম...
সিদ্ধান্ত
অতএব
মহাশয়/মহাশয়া,
অ্যাপ্লায়েড
ম্যাথে অরিজিন অব স্পেসিসকে ইনজেক্ট করে
আমরা
এই সিদ্ধান্তে এসে উপনীত হলাম
নট
নড়নচরন লটকানো মানুষটি
অবশেষে
মৃত।
অর্থাৎ স্বর্গীয়।
পোয়েটিক
জাস্টিসে
কনসোলেশন
প্রাইজ স্বরূপ
উহার
জন্য বরাদ্দ থাক
এক
টুকরো
তামাশা।
(অথবা
জুকেনবার্গীয় ভার্চুয়েল ওয়াল)
No comments:
Post a Comment